কম খরচে সুন্দরবন ভ্রমণ :এ যেন এক অপরূপ সৌন্দর্য্য ও বিভিন্ন জীব বৈচিত্র্য পরিপূর্ণ আমাদের এই সুন্দরবন। দিন দিন সুন্দরবন দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে বাংলাদেশের একমাত্র প্রিয় ট্যুর স্পট। দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম খরচে সুন্দরবন ভ্রমণ করতে চান? তার আগে জেনে নিন সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্য সম্পর্কে।
সুন্দরবনের পরিচিতি:
এটিই একমাত্র বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন।
যেখানে একই সাথে ক্যানেল ক্রুজিং, এডভেঞ্চার ট্রেকিং ও বার্ড ওয়াচিং সহ জীব-জন্তু দেখা এতকিছু একসাথে উপভোগ করতে পারবেন। এইজন্য সুন্দরবনে প্রায় সারা বছরেই পর্যটকরা ভিড় করে থাকেন।
যারা ভ্রমণ পিপাসী পর্যটক, তারা যদি একবার সুন্দরবন ঘুরে আসেন তারা বার বার সুন্দরবন ঘুরতে আসেন। কারণ তারা সুন্দরবনের প্রকৃতির সৌন্দর্যের সাথে একদম মিশে যেতে পারেন।
এই জন্য সুন্দরবন ভ্রমণ সবার কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠে। তবে একটি কারণে সুন্দরবন ভ্রমণ অন্যান্য ভ্রমণ থেকে আলাদা। যদি একবার ট্যুর কোম্পানিকে সুন্দরবন ভ্রমণ প্যাকেজের টাকা দিয়ে দেন তাহলে আপনাকে আর কোনো চিন্তা করতে হবে না।
বলতে গেলে আপনি থাকতে পারেন হাত-পা ঝাড়া হয়ে। তাহলে আপনাকে আর কোনো চিন্তা করতে হবে না। বলতে গেলে আপনি থাকতে পারেন হাত-পা ঝাড়া হয়ে।
কোনো আর টাকা পয়সা খরচ করতে হবে না। আরডি ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে কম খরচে সুন্দরবন ভ্রমণ। একদম আরাম আয়েশে তিন দিনে সুন্দরবনের সৌন্দর্যে মোহিত হবেন। এর থেকে আনন্দের বেপার আর কী হতে পারে!
সুন্দরবনের আয়তন:
আমাদের এই সুন্দর বাংলাদেশে ৬টি ঋতু আছে। প্রত্যেকটি ঋতুতে সুন্দরবন তার সৌন্দর্যের রূপ বদলায়। সুন্দরবনকে অনেকে লবণাক্ত বনাঞ্চল ও বলে।
পুরো সুন্দরবনের আয়তন হচ্ছে প্রায় ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার যা যৌথভাবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অবস্থান করছে।
সুন্দরবনের আয়তন হচ্ছে ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার। বাংলাদেশের সুন্দরবন বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, খুলনা, বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার অংশ নিয়ে গঠিত।
ইউনেস্কো ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থান বলে স্বীকৃতি দিয়েছে।
সুন্দরবনের প্রকৃতি:
সুন্দরবনকে জীব ও উদ্ভিত এর জাদুঘর বলা যেতে পারে। প্রায় ১,৮৭৪ বর্গ কিলোমিটার নদী-নালা ও বিল জুড়ে রয়েছে এই সুন্দরবনে।
সুন্দরবনে রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, নানা ধরণের পাখি, চিত্রা হরিণ, কুমির ও সাপসহ আরো নানা প্রজাতির প্রাণী।
সুন্দরবনে রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, নানা ধরণের পাখি, চিত্রা হরিণ, কুমির ও সাপসহ আরো নানা প্রজাতির প্রাণী।
যদি ঠিকমতো সংখ্যায় বলতে হয় তাহলে ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৮ টি উভচর প্রাণী, ৩৫ টি সরীসৃপ, ১২০ প্রজাতির মাছ।
আরো আছে ৩৫০ প্রজাতির উদ্ভিত ও ২৭০ প্রজাতির পাখি। সুন্দরবনের নাম রাখা হয়েছে সুন্দরী বৃক্ষের নামানুসারে।
সুন্দরবনের গভীরে যেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে নৌপথে যেতে হবে। তাছাড়াও এই বন থেকে প্রতি বছর প্রচুর পরিমানে ২০ হাজার মণ মধু সংগ্রহ করা হয়। বাওয়ালি, জেলে ও মৌয়াল মিলে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ সুন্দরবনের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত।
সুন্দরবন ভ্রমণে উপযুক্ত সময়:
সুন্দরবন ভ্রমণের আসল আনন্দ পাওয়া যায় শীতকালে।
সুন্দরবনের দর্শনীয় স্থানসমূহ:
সুন্দরবনে ঘুরার মত অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে যা আপনার আনন্দের মাত্রা দ্বিগুন বাড়িয়ে দিবে। আপনাদের বোঝানোর সুবিদার্থে নিচে বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হলো:
দুবলার চর: এটি সুন্দরবন এলাকার ছোট্ট একটি চর। চরটির মধ্যে বয়ে যাওয়া নদী বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে।
তাছাড়াও এটি শুটকিপল্লী হিসেবে পরিচিত। মাছ ধরার সুবাদে প্রতিবছর বিভিন্ন স্থান থেকে আশা জেলেরা এইখানে অস্থায়ী বসতি স্থাপন করে।
এছাড়াও তারা ম,মাছ ধরে শুটকি বানিয়ে বাজারে বিক্রি করে। প্রত্যেক কার্তিক মাসে রাসপূর্ণিমায় এইখানে ‘রাসমেলা’ বসে। মূলত হিন্দুদের পূণ্যস্নান উপলক্ষে এই রাসমেলা বসে। রাসমেলা বলতে গেলে রাধা-কৃষ্ণের মিলন উৎসবকে বুঝায়।
করমজল: ইকো ট্যুরিস্টদের কাছে করমজল পর্যটন কেন্দ্রটি খুব আকর্ষণীয়। ইকো টুরিস্ট স্পটটি মূলত কুমির ও হরিণ প্রজনন লালন পালন কেন্দ্র।
ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চড়ে মাত্র দেড় ঘন্টা লাগে মংলা থেকে এই স্থানটিতে পৌঁছাতে। একটি সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার করমজলে আছে যার উপরে উঠে সুন্দরবনের উপরিভাগের সবুজাভ দৃশ্য দেখা যায়।
হিরণ পয়েন্ট: সুন্দরবনের দক্ষিণাংশে হিরণ পয়েন্ট অবস্থিত। যার অপর নাম হচ্ছে নীলকমল।
ইউনেস্কো ঘোষিত অন্যতম একটি বিশ্ব ঐতিহ্য হচ্ছে এই হিরণ পয়েন্ট। এই স্থানটি অভয়ারণ্য হওয়ায় অনেক পাখি, বানর, বাঘ, হরিণ এবং সরিসৃপের নিরাপদ আবসস্থল এই হিরণ পয়েন্ট।
এই জায়গাটির অন্যতম বৈশিষ্ট হচ্ছে এইখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর দেখা মিলে। তাছাড়াও এইখানে হাজার হাজার পশু-পাখির দেখা মিলে। ৩ কিলোমিটার দূরে হিরণ পয়েন্ট থেকে কেওড়াসুঠিতে একটি ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে।
টাইগার পয়েন্ট: আশেপাশের অন্যান্য জায়গা থেকে এই জায়গাটি একটু বেশি উঁচু। এই স্থানটি ঘন জঙ্গল সুন্দরী গাছপালার মাঝে অবস্থিত।
বন্যাতে বা অধিক জোয়ারে এই জায়গাটিতে পানি উঠে না। যার কারণে এইখানে বাঘেরা আশ্রয় নিতে আসে।
বন থেকে বাঘ হরিণ শিকার করে এইখানে বসে খায়। মাঝে মধ্যে পর্যটকেরা এইখানে হাঁড় মাংস খুঁজে পায়। এই জায়গাটিতে আপনি গেলে নিজেকে রোমাঞ্চ অনুভূত করবেন।
হারবারিয়া ইকো পার্ক: হারবারিয়া ইকো ট্যুরিজম স্পটটি আকর্ষণীয় একটি স্থান। পর্যটকরা জাহাজ ভ্রমণের সময় এই স্থানটি উপভোগ করে।
এই অংশটিতে ভ্রমণের সময় গোলপাতার বাড়ি, ম্যানগ্রোভ অরণ্য, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, বাঘের পদচিহ্ন, পুকুর দেখতে পারবেন।
কটকা সমুদ্র সৈকত: সুন্দরবনের মধ্যেই তৈরী হয়েছে একটি অভয়ারণ্য এলাকা নাম কটকা।
এই স্থানের মূল আকর্ষণ হচ্ছে বেঙ্গল টাইগারের দেখা মিলে। তাছাড়াও বিভিন্ন বন্য প্রাণীর উপস্থিতি দেখে পর্যটকদের মন কাড়ে।
ওয়াচ টাওয়ার: কটকা থেকে হাতের ডানে কিছু দূর যাওয়ার পরেই ওয়াচ টাওয়ার এর দেখা মিলবে। এটি চারতলা বিশিষ্ট। টাওয়ারটির উচ্চতা হচ্ছে প্রায় ৪০ ফুট। এইখান থেকে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখা যায়। স্নানের (গোছল) জন্য জামতলা সমুদ্র সৈকত মোটেই আদর্শ স্থান নয়।
আরডি ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস এর কম খরচে সুন্দরবন ভ্রমণ প্যাকেজ:
যদি সুন্দরবনে কম খরচে ঘুরে আসতে চান তাহলে আরডি ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস সুন্দরবন ঘুরে আসার জন্য খুব অল্প খরচে ভ্রমণ প্যাকেজ এর ব্যবস্থা করেছে যা কিনা বাংলাদেশে সেরা সুন্দরবন ভ্রমণ প্যাকেজ। আমাদের প্যাকেজ এর মূল্য খুবই কম। মাত্র জনপ্রতি ৮,৫০০ /= টাকায় কম খরচে সুন্দরবন ভ্রমণ করে আসতে পারবেন।
যা অবশ্যই সাথে নিবেন:
- গাম বুট
- রেইন কোর্ট
- পানির পট
- কাধে ঝুলানো যায় এমন ছোটো ট্রাভেল ব্যাগ
- ছোট টর্চ (রাতে আমরা বনে নামবো না, তবু টর্চ থাকা ভালো)
- বড় গামছা
তাছাড়াও আরো নিবেন:
- প্রয়োজনীয় ঔষধ
- টুথ ব্রাশ ও পেস্ট
- ক্যাপ,সান গ্লাস সানস্ক্রিন লোশন
- ক্যামেরা, মেমরি কার্ড ও পাওয়ার ব্যাংক
- সাবান, শ্যাম্পু
- ব্যাক্তিগত অভ্যাসের সামগ্রী
#বিদ্রঃ ভেসেলে উঠার পরে কোন প্রকার কেনাকাটার সুযোগ নেই। বনের গভীরে কিছু যায়গায় শুধু টেলিটক মোবাইল অপারেটরের নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে।
ভ্রমণপথ:
- ০ দিন: রাত ৯ টায় সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল হতে মংলার উদ্দেশ্যে রওনা
- ১ দিন: মংলা হতে বিলাসবহুল জাহাজ ‘এমভি বন বিলাস ‘এ সুন্দরবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা। রাতে কটকা অবস্থান
- ২ দিন: হীরণ পয়েন্ট ঘুরে জামতলা সী-বিচ হয়ে দুবলার চরের উদ্দেশ্যে যাত্রা। বঙ্গপসাগর ভ্রমন ও রাশ মেলা দেখা।
- ৩ দিন: হারবাড়িয়া, করমজন ও ক্রোকোডাইল প্রজেক্ট ভ্রমন শেষে মংলার উদ্দেশ্যে যাত্রা। সন্ধ্যার মধ্যে মংলায় পৌঁছে রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা
প্যাকেজে যা যা অন্তর্ভুক্ত:
- ঢাকা-মংলা-ঢাকা নন-এসি চেয়ার কোচ বাস টিকিট
- টুইন বেসিস এ থাকা। এক কেবিনে আলাদা সিঙ্গেল বেডে দু’জন থাকবেন। কেবল কাপল ক্যাবিনে একটি কাপল বেড থাকবে
- জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে
- খাবার
- লাইফ জ্যাকেট। পর্যাপ্ত পরিমান বয়া
- ফাস্ট এইড
- বন বিভাগ অনুমদিত গাইড এবং নিরাপত্তা কর্মী
স্পেশাল ফিচার:
- ক্যানেল ক্রুজিং
- প্রতিবেলা খাবারের সাথে কমপ্লিমেন্টারি সুন্দরবনের বিশুদ্ধ মধু
সুন্দরবন ভ্রমণের করনীয়:
- উজ্জল রঙ্গের কাপড় (যা অনেক দূর থেকে চোখে পড়ে) পরিহার করা। হালকা রঙের এবং ঢিলে ঢালা ফুল স্লিব পোশাক পরা
- কোন প্রকার সুগন্ধি ব্যবহার না করা
- পিছনে বেল্ট আছে এবং পানিতে ভিজলে নষ্ট হবে না এমন সেন্ডেল / কেডস সাথে নিতে হবে।
- এডভেঞ্চার ট্যুরে লাগেজের সাইজ ছোট হওয়াই ভালো
- জঙ্গলে নামার পর কোন অবস্থাতে উচ্চ স্বরে কথা বলা যাবে না
আরো যা যা করবেন:
- পানি অপচয় না করা (নদীর পানি নোনা) এবং খাবার পানি অন্য কোন কাজে ব্যবহার না করা
- জঙ্গলে নামার পর সু-শৃক্ষল ভাবে হাটতে হবে এবং কোন অবস্থাতে দল ছুট হওয়া যাবে না
- গাছের ডাল, পাতা বা লতায় হাত দেওয়া বা ছেড়া যাবে না
- পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ করা যাবে না। যেমন: পলিথিন বা প্যাকেজিং বস্তু যত্রতত্র ফেলা যাবে না
- স্থানীয় এবং অন্য ভ্রমণকারী দলের সদস্যদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা
- সুন্দরবন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ গাইড এবং নিরাপত্তা রক্ষীদের নির্দেশনা মেনে চলা
আরো পড়ুনঃ
মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্যালি ট্যুর
Best Travel Agency in Bangladesh
Comments